"মাইজভাণ্ডারী গাউসিয়া হক কমিটি বাংলাদেশ ",আতুরার ডিপো হাসেম বাজার শাখা। অস্থায়ী ঠিকানাঃখালেদা-মাহমুদা ম্যানশন,সঙ্গীত রোড,পাঁচলাইশ,চট্ট্রগ্রাম. আলাপনী-০১৮৩৮৬৩৭৬৯৮।ই-মেইলঃhoqcommity@gmail.com।

দুই গাউসুল আ'যম (পর্বঃ ১)

পৃথিবীতে প্রকাশ্য দুই জন গাউসুল আ'যম দেখা যায়, বেলায়তে মোকাইয়্যাদায়ের যুগে গাউসুল আ'যম হযরত শায়খ আবদুল কাদের জিলানী (কঃ) এবং বেলায়তে মোতলাকার যুগে গাউসুল আ'যম হযরত সৈয়দ আহমদ উল্লাহ মাইজভাণ্ডারী (কঃ)।
হযরত ঈসা (আঃ) হতে হযরত মুহাম্মদ (দঃ),গাউসুল আ'যম হযরত শায়খ আবদুল কাদের জিলানী (কঃ),গাউসুল আ'যম হযরত সৈয়দ আহমদ উল্লাহ মাইজভাণ্ডারী (কঃ) পর্যন্ত ৬০০ বছরের একটা দাইরা বৃত্ত পাওয়া যায় ৬০০x৩= ১৮০০ বছর।হযরত ঈসা (আঃ)এর জন্ম (০১) প্রথম খৃষ্টাব্দে এবং গাউসুল আ'যম হযরত সৈয়দ আহমদ উল্লাহ মাইজভাণ্ডারী (কঃ) এর জন্ম ১৮২৬ খৃষ্টাব্দে।কলিকাতা আলিয়া মাদ্রাসার অবসর প্রাপ্ত মোদাররেছ কুতুবে জমান হজরত মওলানা শাহছুফী ছফী উল্লাহ (রঃ)জজবা হালতে এক ব্যক্তিকে গাউসুল আ'যম হযরত সৈয়দ আহমদ উল্লাহ মাইজভাণ্ডারী(কঃ)সম্পর্কে বলতে লাগলেন, ˝ মিয়া চিন! কিরূপ চিন? ছয়শত বছরের মধ্যে এইরূপ অলীউল্লাহ পৃথিবীতে আসেননি˝ [তথ্যসূত্রঃ বেলায়তে মোতলাকা}উল্লেখিত বাণী হতে স্পষ্ট বুঝা যায় যে ইহা ৬০০x৩ বছরের একটা দাইরা বৃত্ত। এই দায়রা বৃত্তটি পর্যায়ক্রমেঃ হযরত ঈসা (আঃ) এর জন্ম (০১) প্রথম খৃষ্টাব্দে হতে →হযরত মুহাম্মদ (দঃ)→গাউসুল আ'যম হযরত শায়খ আবদুল কাদের জিলানী (কঃ)→গাউসুল আ'যম হযরত সৈয়দ আহমদ উল্লাহ মাইজভাণ্ডারী (কঃ) এর জন্ম ১৮২৬ খৃষ্টাব্দ পর্যন্ত মোট ১৮০০ বছরের একটা দাইরা বৃত্ত।
হযরত মওলানা জালাল উদ্দিন রূমি (রঃ) বলেনঃ প্রত্যেক বৃত্তের জগতের আবর্তন-বিবর্তনের যুগে একজন বিশিষ্ট ওলী থাকবেন যার পরীহ্মা নিরীহ্মা কেয়ামত পর্যন্ত বিদ্যমান থাকবেন। [মসনবি শরীফ]
গাউসুল আ'যম হযরত শায়খ আবদুল কাদের জিলানী (কঃ)’র নামে পবিত্র কুরআন শরিফ ও হাদিস শরিফে কোন স্পষ্ট আয়াত নাই অনুরুপভাবে গাউসুল আ'যম হযরত সৈয়দ আহমদ উল্লাহ মাইজভাণ্ডারী (কঃ) নামে কোন স্পষ্ট আয়াত নাই, কারন ভবিষ্যত (গায়েব) সম্পর্কে পবিত্র কুরআন শরিফ ও হাদিস শরিফে আয়াতের সংখ্যা খুবই কম। কিন্ত আধ্যাক্তিকভাবে অনেক আয়াত আছে।সাহাবী/তাবেয়ীদীনদের অথবা তাদের পরবর্তি যুগে দুই তিনটা রেফেরেন্স আছে এই রেফেরেন্সগুলিতে উল্লেখিত দুই গাউসুল আ'যম ঈঙ্গিত পাওয়া যায়। যেমনঃ হজরত মুহাম্মদ (দঃ)’র আব্বাজান স্বপ্নে দেখেছিলেনঃ মুহাম্মদী নূর শক্তি দুই ভাগে বিভক্ত হবে, এক ভাগ আরবে প্রকাশ হয়ে সারা বিশ্বভুবন আলোকিত করবে, অপর ভাগ মূলকে আজমে এশিয়ার পূর্বে অঞ্চলে উদিত হয়ে নিখিল ধরণীর অন্ধকার দুরীভুত করবে। (মওলুদে দিল পজির)। আমরা সুস্পষ্টভাবে বুঝতে পারি এশিয়ার পূর্বে অঞ্চলে রাসুল (দঃ) এর সর্বশেষ্ট রূপ ও আওলাদ গাউসুল আ'যম হযরত সৈয়দ আহমদ উল্লাহ মাইজভাণ্ডারী (কঃ) জন্ম বা উদিত হয়। মহিউদ্দিন ইবনুল আরাবী (রঃ) তার ফছুছুল হেকম কিতাবে বলেনঃ খাতেমুল আউলিয়া রসুলুল্লাহের বিভিন্নরূপের মধ্যে শ্রেষ্ঠতম রূপ’’ খাতেমুল আউলিয়ার বর্ণানা অনুসারে গাউসুল আ'যম হযরত সৈয়দ আহমদ উল্লাহ মাইজভাণ্ডারী (কঃ) হলেন প্রথম খাতেমুল আউলিয়া। হযরত জালালুদ্দীন সয়ুতি (রঃ) এর খাসায়েসুল কুবরা ২য় খন্ড থেকে সংগৃহীতঃ হযরত মুগীরা ইবনে শোবা রেওয়ায়েত করেন- হযরত ওমর ফারুক (রঃ) আমাকে বলেছেন আল্লাহর কসম! বনু উমাইয়া ইসলামকে বধির করে দিবে, এরপর অন্ধ করে দিবে, এরপর জানা যাবে না ইসলাম কোথায় আছে এবং ইসলামের শাসন কর্তা কে, তখন ইসলাম এখানে ওখানে থাকবে। এই অবস্থা ১৩৬ বৎসর অব্যাহত থাকবে। এরপর আল্লাহতায়লা একদল দুত প্রেরন করবেন। যারা রাজকীয় দুতের মত হবেন।তাদের সুগন্ধি পবিত্র হবে, তাদের মাধ্যমে আল্লাহতা'য়ালা ইসলামের দৃষ্টি শক্তি ও শ্রবন শক্তি ফিরিয়ে দিবেন। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, এই দূত কারা, হযরত ওমর বললেন ˝তারা হলেন ইরাকী,আজমী ও প্রাচ্যদেশীয়।˝
সহজে বলতে পারি যে ইরাকী হলেন -গাউসুল আ'যম হযরত শায়খ আবদুল কাদের জিলানী (কঃ), আজমী হলেন-কুতুবুল আকতাব হজরত খাজা মঈন উদ্দিন চিশতী (কঃ)এবং প্রাচ্যদেশীয় হলেন- গাউসুল আ'যম হযরত সৈয়দ আহমদ উল্লাহ মাইজভাণ্ডারী (কঃ) এবং বাহরে ছানী গাউসুল আযম সৈয়দ গোলামুর রহমান বাবা ভান্ডারি (কঃ)।
বাহারুল উলুম মওলানা আবদুল গনি কাঞ্চনপুরী (রঃ) লিখিত আয়নায়ে বারী কেতাবের ১৫১ পৃঃ উল্লেখিত আছেঃ হযরত মুহাম্মদ মুস্তফা আহমদ মুজতাবা (দঃ) নবীদের মধ্যে সর্বশেষ নবী এবং রেসালত প্রাপ্ত নবীদের বাদশাহ ছিলেন। সেইরূপ হযরত গাউসুল আ'যম শাহছুফী সৈয়দ মওলানা আহমদ উল্লাহ (কঃ) বেলায়তের মোকাইয়্যাদা যুগের খাতেম বা পরিণতিকারী। তিনি আউলিয়াদের বাদশা এবং দোজাহানের গাউসুল আ'যম এবং হযরত রসুলে খোদা (দঃ) এর বেলায়তের উত্তরাধিকারী হন। আয়নায়ে বারী কেতাবের ১৩৮ পৃঃ আছেঃ ˝অলিদের শিরোমণি খোদার গাউছ ভবে পদার্পণ করেছেন। জগদ্বাসীর প্রাণপ্রিয়, ছুফীদের লক্ষ্যস্থল ইমাম ভবে তশরীফ এনেছেন˝। আয়নায়ে বারী কেতাবের ১৪০ পৃঃ আছেঃ ˝ মহা প্রভুর আসন রবি (সূর্য) উদিত হয়েছে, মানব আকারে খোদার গোপন রহস্য প্রকাশ পেয়েছেন˝
মওলানা আবদুল গনি কাঞ্চনপুরী (রঃ) কে তার সমসাময়িক আলেম ও ওলীউল্লাহরা জ্ঞানের সাগর হিসেবে অভিহিত করতেন। আত তাওজিহাতুল বহিয়া নামক কিতাবে অলীয়ে কামেল হজরত মওলানা আমিনুল হক ফরহাদাবাদী (রঃ) লিখেছেনঃ (তার) হযরত গাউসুল আ'যম শাহছুফী সৈয়দ মওলানা আহমদ উল্লাহ (কঃ) গুনাবলী আল্লাহতা'য়ালার গুনাবলী হতে অর্জিত। তিনি আল্লাহতা'য়ালার সৃষ্টি কুলে দেশ সমূহে গাউসুল আ'যম রূপে নিয়োজিত। গাউসুল আ'যমের অনুগ্রহের ছায়ায় আল্লাহতা'য়ালা আমাদের-কে স্থান দান করূন।আমিন