মওলানা সৈয়দ আবদুল করিম মদনীর (রঃ) বলেছিলেনঃ আরব রাজ্য ছাড়া আমি বহুদেশে ইন্দোনেশিয়া পর্যন্ত ছায়র করেছি। চট্রগ্রাম আমার শেষ ছায়র। মাইজভাণ্ডারের মৌলানা সৈয়দ আহমদ উল্লাহ (কঃ) ছাহেবের মত জবরদস্ত ওলীউল্লাহ আমি কোথাও পাইনি। শামসুল ওলামা মওলানা জুলফিকার আলী ছাহেব বলেছিলেনঃ (কলিকাতা নিবাসী-যিনি তৎকালীন প্রসিদ্ধ মাদ্রাসা চট্রগ্রাম মোহছেনীয়া মাদ্রাসার ভূতপূর্ব সুপারিন্টেনডেন্
শেরে বাংলা আল্লামা হজরত সৈয়দ আজিজুল হক আল কাদেরী (রঃ) , হযরত গাউসুল আ'যম শাহছুফী সৈয়দ মওলানা আহমদ উল্লাহ (কঃ) শানে ফার্সী ভাষায় লেখা তার নজরে আকিদত শীর্ষক কছিদায় লিখেছেন, হযরত শাহ আহমদ উল্লাহ কাদেরী মাইজভাণ্ডার সিংহাসনে অধিষ্ঠিত গাউছুল আজম নামধারী বাদশাহ। তিনি নবীর আহমদী মসরব উম্মতগণের চেরাগে হেদায়ত বা আলোক বর্তিকা। উল্লেখ্য পবিত্র কুরআন শরিফে সূরা নুহ এর ১৬ নং আয়াতে চেরাগকে সূর্য ও সূরা আহযাব এর ৪৬ নং আয়াতে রাসূল (দঃ) কে চেরাগ হিসাবে সম্বোধন করেছিলেন। সুতারাং শেরে বাংলা (রঃ) কালামঃ গাউসুল আ'য, মাইজভাণ্ডারী উম্মতি আহমদির চেরাগ দ্বারা মহিউদ্দিন ইবনে আরবী (রঃ) এর কালামঃ (তিনি রসুল (দঃ) জমায়াতের ইমাম হন এবং শাফায়াতের দরজার উন্মোচনকারী হিসাবে আদম সন্তানের সর্দার হন) সাথে মিলে যার। তাদের এই কালাম গুলি হযরত গাউসুল আ'যম মাইজভাণ্ডারীর কালামঃ ˝হাশরর মাঠে প্রথম আমিই বলিব লা ইলাহা˝ কালামের অন্তনিহিত অর্থের সাথে মিলে যায়। শেরে বাংলা আল্লামা হজরত সৈয়দ আজিজুল হক আল কাদেরী (রঃ) আরো বলেনঃ রসুলুল্লাহ (দঃ) এর নিকট বেলায়তে ওজমা বা শ্রেষ্ট বেলায়তের দুইটি সম্মান প্রতীক বা তাজ ছিল, এই তাজ দুইটির মধ্যে একটি হযরত গাউসুল আ'যম শাহ আহমদ উল্লাহ (কঃ) এর মস্তক মোবারকে নিশ্চিতভাবে প্রতিষ্ঠত, অপরটি জিলান নগরের বাদশা হযরত গাউসুল আ'যম শায়খ সৈয়দ আবদুল কাদের জিলানীর (কঃ) মস্তক মোবারকে প্রতিষ্ঠিত˝। আল্লামা শেরে বাংলা (রঃ) এর কালামটি হযরত গাউসুল আ'যম মাইজভাণ্ডারী (কঃ) এর নিম্মে লিখিত পবিত্র কালামের সাথে মিলে যায়ঃ রাসূলুল্লাহ (দঃ) গাউসুল আজমিয়তের দুই তাজের (টুপি) একটি আমার মাথায় এবং অপরটি আমার ভাই বড় পীর সাহেবের মাথায় দিয়েছেন।
মিশরের আল আজহার বিশ্ব বিদ্যালয়ের এর রেকটর সাহেব মরহুম ব্যারিষ্টার বজলুস সত্তারকে বলেনঃ ˝You are lucky, you have come from the birth place of Gausul Azam Hazrat Ahmedullah Maizbhandari’’
প্রখ্যাত পীরে কামেল হযরত আল্লামা সৈয়দ আহমদ ছিরিকোটি (রঃ) ছাহেব হযরত গাউছুল আজম হযরত সৈয়দ আহমদ উল্লাহ মাইজভাণ্ডারী (কঃ) সমন্ধে জিজ্ঞাসিত হয়ে বলেনঃ ˝উনকা বারে মে মত পুছ বেটা, আগর না কুছ বেয়াদবী হো যায়ে। মশরেকী মুলকমে এতনা বড়া হাস্তি আওর নেহি আয়া˝- তার সমন্ধে জিজ্ঞাসা করোনা,হয়তো বেয়াদবী হয়ে যাবে। পূর্বাঞ্চলে (জম্মসুত্রে স্থানের দিকে নিসবত ) তার মত এত বড় অলি আর আসেনি। হযরত আল্লামা সৈয়দ আহমদ ছিরিকোটি (রঃ) ছাহেব এর কালাম দ্বারা উল্লেখিত হযরত ওমর (র) ভবিষ্যত বানী পূর্বাঞ্চলের বা প্রাচ্যদেশীয় রাজকীয় দূতের সাথে মিলে যায়।হযরত গাউসুল আ'যম মাইজভাণ্ডারী (কঃ) ও হযরত গাউসুল আ'যম শায়খ আবদুল কাদের জিলানী (কঃ) নিন্মলিখিত কালাম দ্বারা বুঝায় যে দুই জনই ঘনিষ্ট বন্ধু এবং গাউসুল আ'যম ।
হযরত গাউসুল আ'যম মাইজভাণ্ডারী (কঃ)বলেনঃ আমার নাম পীরানে পীর ছাহবের নামের সাথে সোনালী অক্ষরে লিখা আছে। আমি এবং আমার ভাই বড় পীর সাহেব একদা কাবা শরিফে ঢুকে রাসূলুল্লাহ (দঃ) ছদর মোবারকে (বহ্মস্থল) ডুব দিলাম, দেখলাম সেটা এক অনন্ত দরিয়া। রাসূলুল্লাহ (দঃ) শ্রেষ্ঠ বেলায়েতের দুইটি তাজের (টুপি) মধ্যে একটি আমার মাথায় এবং অপরটি আমার ভাই বড় পীর সাহেবের মাথায় দিয়েছেন। [হজরত কেবলার জীবনী গ্রন্থ ও বেলায়তে মোতালাকা]
হযরত গাউসুল আ'যম পীরেনে পীর দস্তগীর (কঃ) বলেনঃ আমার এক ঘনিষ্ট বন্ধু আছে ( বাহযাতুল আসরার >ক্ষমতা প্রয়োগে সক্ষম অংশে)। হযরত গাউসুল আ'যম পীরেনে পীর দস্তগীর (কঃ)বলেনঃ আল্লাহর অনেক ওলী আছেন। কিন্তূ শ্রেষ্ট ওলীর সংখ্যা খুবই কম, তারা সংখ্যায় মাত্র দুই একজন অনন্য সকলে তাদের খেদমতে হাজির হন এবং তাদের নৈকট্য লাভের চেষ্টা করেন। তাদের বরকতেই আল্লাহ যমীনে ফসল দান করেন, আকাশ হতে বৃষ্টি বর্ষণ করেন এবং মানুষের বালা মুছিবত দুর করেন (ফতহুর রব্বানী)। হজরত পীরেনে পীর দস্তগীর (কঃ) কালাম দ্বারা আরো একজন সর্বশেষ্ট ওলী বা গাউছুল আযমের অস্তিত্বের প্রমান পাওয়া যায়। তারা উভয়ই গাউছুল আজাম হওয়ার দাবি করেছেন। গাউছে ধন জগতের সুলতান হযরত পীরেনে পীরের পদে পদমান। গাউছে ধন জগতের সুলতান। কালামটি লিখেছেন বিখ্যাত ওলীআল্লাহ হযরত মওলানা বজলুল করিম মন্দাকিনী (রঃ)।হযরত গাউসুল আ'যম মাইজভান্ডারী (কঃ) তার পবিত্র জবানে কালাম করেন,
"আমার কাছে যে কেউ যাহায্য প্রার্থনা করবে আমি তাকে উন্মুক্ত সাহায্য করব, আমার এই সরকারের ধারা হাশর পর্যন্ত জারি থাকবে।" [হজরত কেবলার জীবনী গ্রন্থ]
হজরত কেবলার পবিত্র এই কালাম, তার গাউসুল আ'যম হওয়ার অন্যতম একটা স্বীকারুক্তি। তিনি তার সাহায্যের কোনো সীমা টানেননি, সাহায্য প্রার্থীর ক্ষেত্রেও না সাহায্যের ধরনের ক্ষেত্রেও না। যে কেউ হযরত গাউসুল আ'যম মাইজভান্ডারী (কঃ) কাছে সাহায্য চাইতে পারবেন এবং তিনি উন্মুক্ত সাহায্য করবেন। হজরত কেবলার সাহায্যের এই প্রকৃতি হাশর পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। এমন কালাম আল্লাহর জমিনের বুকে কোনো আল্লার ওলি করেননি একমাত্র হযরত গাউসুল আ'যম আহমদ উল্লাহ মাইজভান্ডারী (কঃ) ব্যতিত। দুই জাহানের মধ্যে সমান ভাবে সাহায্যকারী তিনি। সেই শ্রেষ্ঠ সাহায্যকারী যিনি দুনিয়া এবং আখেরাত উভয় স্থানে সাহায্য করার ক্ষমতা রাখেন। এটি এমন এক বিরল ক্ষমতা যা তিনি আল্লাহ ও তার রাসুলে পাক (দঃ) এর তরফ থেকে পেয়েছেন। গাউসুল আ'যম শব্দের একটা অর্থ হচ্ছে শ্রেষ্ঠ সাহায্যকারী বা শ্রেষ্ঠ ত্রাণকারী, যা হজরত কেবলায়ে আলম খাতেমুল অলদ সৈয়েদেনা হযরত গাউসুল আ'যম শাহ্সুফী মাওলানা আহমদ উল্লাহ মাইজভান্ডারীর (কঃ) জন্যে অত্যন্ত উপযুক্ত।
হযরত গাউসুল আ'যম শায়খ আবদুল কাদের জিলানী (কঃ) কালামঃ আমার কদম সকল ওলী আল্লাহর গর্দানের উপর। এই কালামটির সূত্র ধরে বর্তমান যুগের কিছু আলেমদের অ্ন্যান্য বিখ্যাত ওলী আল্লাদের খাটো করার প্রবনতা দেখা যাচ্ছে। সীরতে গাউসুল আ'যম গ্রন্থের প্রণেতা, তাযকিরায়ে গাউসুল আ'যম , ফুতুহাতে মক্কিয়া ,শরহে ফতুহুল গাইব,, বড় পীর সাহেবে জীবনী এবং অন্যান্য বিখ্যাত ওলীআল্লাদের কালাম অনুসারে দেখা যায় যে পীরেনে পীর দস্তগীর (কঃ) উল্লেখিত কালামটি তৎকালীন যুগের ওলী আল্লাদের প্রতিই প্রযোজ্য। এই বিষয়ে নিম্নে কিছু রেফারেন্স দেওয়া হলঃ
সীরতে গাউসে আ'যম গ্রন্থের প্রণেতার বলে এবং মাকতুবাত শরিফের ২৯৩ মাকতুবেঃ হযরত গাউসুল আ'যম বড় পীর (রঃ) পূর্ববর্তী এবং পরবর্তী সকল আউলিয়াগণকেই হযরত বড় পীর সাহেবের অনুসারী কেউ কেউ এই হুকুমের মধ্যে শামিল করতেন। কিন্ত ইহা মেনা নেওয়া যায় না। ইহা পূর্ববর্তী এবং পরবর্তী আউলিয়াগণ সম্পর্কে ছিলনা। বরং বড়পীর সাহেবের জামানার অলি উল্লাগনের সম্পর্কে বলা হয়েছিল। কারন পূর্ববর্তী এবং পরবর্তী আউলিয়াগণের মধ্যে চার খলিফা ও অন্যান্য সাহাবায়ে কেরাম শামিল রয়েছেন।তাদের ফজিলত সকল আউলিয়াগণের উপরে বলে হাদিস দ্বারা প্রমানিত আছে। পরবর্তী সকল আউলিয়াগণ সম্পর্কেও এই উক্তি প্রযুক্ত হতে পারে না। কেননা, হযরত ইমাম মাহদি (আঃ) পরবর্তী আউলিয়াগণের মধ্যে শামিল রয়েছেন।
৬৩০ হিজরীতে বাগদাদে আমাদের শেখ আবু ননজীব আবদুল কাদির সহরওয়ার্দী সংবাদ দিলেন যে ৫০৩ হিজরিতে আমি শেখ হাম্মাদ বিন দব্বাস (রঃ) নিকট ছিলাম। শেখ আবদুল কাদির (রঃ) ঐ দিন তার সহবতে আসেন। তখন তিনি আসলেন এবং তার সামনে আদব সহ বসে গেলেন। অতঃপর শেখ দাঁড়িয়ে গেলেন। শেখ আবদুল কাদের (রঃ) দাড়ানোর পর আমি শেখ হাম্মাদ (রঃ) কে বলতে শুনলাম ˝ এ অনারবীর কদম এমন যে স্বীয় যুগে অলিদের গর্দানের ওপর বুলন্দ হবে, সে আদিষ্ট হবে যে, আমার এ কদম সকল আউলিয়া আল্লাহর গর্দানের ওপর বলতে, তিনি অবশ্য তা বলবেন এবং এ সময়ের আউলিয়াদের গর্দান তার জন্য অবশ্যই ঝুকবে। তাযকিরায়ে গাউছুল আজম গ্রন্থের পৃঃ ১০। এখানে তিনি উল্লেখ করছেনঃ স্বীয় যুগে অলিদের গর্দানের ওপর বুলন্দ হবে। শেখ আবু বকর বিন হাওয়ার (রঃ) একাদা মজলিসে আপন সাথীদের মাঝে আউলিয়াদের অবস্থার কথা বলেন অতঃপর বলেন, অচিরেই ইরাকে এক আজমী বা অনারবী মর্দে-খোদা অনন্য লোকদের নিকট উচ্চ মর্যাদা সম্পর্ন হবেন। তার নাম আবদুল কাদের, বাসস্থান ইরাকে হবেন। তিনি বলবেন আমার এ কদম সকল আউলিয়ার গর্দানের উপর তার যুগের সকল আউলিয়াগণ তার কথা মেনে নিবেন। তিনি আপন যুগের একক ব্যক্তিত্ব তথা অদ্বিতীয়। তাযকিরায়ে গাউছুল আজম গ্রন্থের পৃঃ ৬। এখানেও তার যুগের বা আপন যুগের কথা বলেছিলেন।