"মাইজভাণ্ডারী গাউসিয়া হক কমিটি বাংলাদেশ ",আতুরার ডিপো হাসেম বাজার শাখা। অস্থায়ী ঠিকানাঃখালেদা-মাহমুদা ম্যানশন,সঙ্গীত রোড,পাঁচলাইশ,চট্ট্রগ্রাম. আলাপনী-০১৮৩৮৬৩৭৬৯৮।ই-মেইলঃhoqcommity@gmail.com।
মারাজাল বাহরাইন চেরাগে গাউসুল আ'যম মাইজভান্ডারি বিশ্বঅলি শাহানশাহ হযরত শাহসুফি সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভান্ডারি ক: এর জীবন-পর্বঃ (৩)
ক্রমে ক্রমে ভাব-বিভোরতা বাড়তেই থাকে।আত্মীয় স্বজন উনার পিতা মাতা কে পরামর্শ দিলেন বিয়ে হলে হয়তো ছেলে সংসারমূখী হয়ে উঠবে,ভাব বিভোরতা কমে যাবে।বিয়ের উপযুক্ত বয়স,তাই বিয়ে করানোও প্রয়োজন।চট্টগ্রামের জনৈক বিশিষ্ট শিল্পপতি মেয়ে দেওয়ার প্রস্তাব দিলেন।সেখানে আত্মীয়তা করতে পরিবারের সকলে রাজি।কিন্তু কি এক অজ্ঞাত কারণে তিনি (মেয়ের বাবা) নিজ মত পরিবর্তন করেন।পরে ফটিকছড়ি থানার দাঁতমারা ইউনিয়নের বিশিষ্ট জমিদার জনাব বদরুজ্জামান চৌধুরী (প্রকাশ বদন শিকদার) সাহেবীর কন্যা মোসাম্মৎ সৈয়দা মুনওয়া বেগম সম্পর্কে আলোচনা হয়।এ আত্মীয়তার ব্যাপারে বরও (জিয়া বাবাও) সম্মত ছিলেন।অবশেষে বিয়ের তারিখ ধার্য করা হয় ২৮ জানুয়ারি ১৯৫৫ খ্রিষ্টাব্দ,মঙ্গলবার।
বিয়ের দিন বিকাল ২টায় চারখানা মোটর গাড়িযোগে বরযাত্রীরা দাঁতমারার উদ্দেশ্যে মাইজভান্ডার দরবার শরিফ থেকে যাত্রা আরম্ভ করেন।চৌদুল (বড় পালকী) ভাড়া নেয়া হলেও অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি (জিয়া বাবা) গাড়িতে থাকেন।উনারা যখন নারায়ণহাটে পৌঁছে তখন রাত ঘনিয়ে আসে।বরকে তথায় চৌদুলে (বড় পালকীতে) বসানো হয়।চল্লিশটি হ্যাজাক বাতি (পাম্প লাইট) জ্বালিয়ে ব্যান্ড বাজিয়ে দশ দিক মুখরিত করে উনারা চলছেন।কিছুদুর যাবার পর খবর আসে চৌদুলে বর নেই।লাইট নিয়ে খুঁজতে খুঁজতে বরকে একটা ঝোপের মধ্যে পাওয়া গেল।তিনি বনের মধ্যে দিব্যি বসে আছেন।সকলের অনুরোধে অবশেষে চৌদুলে ফিরে আসেন।রাত ১১টার দিকে উনারা কনের পিত্রালয়ে গিয়ে উপস্থিত হন।রাত ১২ টার পূর্বে আকদ সম্পন্ন হয়।আনন্দ ঘন পরিবেশে রাত কেটে সকালে নাস্তা সেরে নববধু নিয়ে বরযাত্রী দল বাড়ির দিকে যাত্রা করেন।বাড়িতে এসে বিয়ের সাজসজ্জাসহ তিনি রাওজা শরিফের পুকুরের উত্তর দিকে লবণ গুদামে গিয়ে প্রবেশ করেন।নববধুর সাথে দর্শনের কোন ইচ্ছাও প্রকাশ করলেন না।স্ত্রীর প্রতি দু'বছর উনার কোন আকর্ষণ দেখা যায় নি।সর্বদা দূরে দূরে থাকতেন।এ সময় তিনি খুব শান্ত ছিলেন।উনাদের প্রথম কন্যা মাতুতালয়ে জম্মগ্রহণ করে এবং সেখানেই মাত্র দু'মাসের মধ্যে মারা যায়।বর্তমানে উনাদের পাঁচ কন্যা ও এক পুত্র রয়েছেন।উনাদের নাম শাহজাদী সৈয়দা জেবুননাহার বেগম,শাহজাদী সৈয়দা হুমায়রা বেগম,শাহজাদা সৈয়দ মুহাম্মদ হাসান মাঃ জিঃ আঃ,শাহজাদী সৈয়দা কুমকুম হাবিবা,শাহজাদী সৈয়দা উম্মে মুনমুন হাবিবা,শাহজাদী সৈয়দা নূরে আসমা কানিজ ফাতেমা।
কারামাতঃ আরো বার বছরঃ
হাদিসে কুদসিতেবলা আছে-'মানুষ আমার (আল্লাহর) রহস্য এবং আমি মানুষের রহস্য'।হাদিসে কুদসীর এ বর্ণনায় যেন মূর্তপ্রতীক বিশ্বঅলি শাহানশাহ সৈয়দ জিয়াউল মাইজভাণ্ডারী কঃ।মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর রহস্যরাজি বাস্তবতার নিমিত্তে শাহানশাহ হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারীর কর্ম,আচরণ ও অলৌকিক ঘটনার মাধ্যমে প্রকাশ পেত অহরহ।তিনি প্রতিদিন প্রায় প্রতিনিয়ত এত অধিক সংখ্যক রহস্যময় বাক্য উচ্চারণ ও ঘটনার সৃষ্টি করতেন যে,তা সাধারোণের পক্ষে নির্ণয় অসম্ভব।উনার অনেক বাক্যই ছিল সাধারণের জন্য অবোধ্য।তিনি মাঝে মধ্যে এমন ভাষায় স্বগতোক্তি করতেন যা একান্ত ঘনিষ্ট নিত্য সহচরেরা পর্যন্ত কখনো শুনেননি।১৯৭৫ সালের ২৩ জানুয়ারী।বহু লোকের সামনে হযরত সৈয়দ দেলাওর হোসাইন মাইজভাণ্ডারী কঃ বলেন, "ক'দিন আগে আমার মুনিব হযরত কেবলা কঃ এখানে এসেছিলেন।আমি যেতে রাজি কিনা জিজ্ঞাসা করেছেন,আমি সম্মতি দিয়েছি"।সেখানে উপস্থিত রাউজান গুজরা নিবাসী আমিনুর রহমান সওদাগর কেঁদে , "গাউসিয়া হক মঞ্জিলের" কাচারি ঘরের সামনে এসে পৌঁছলে তথায় দন্ডায়মান সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী কঃ তাঁকে কাণ্ণাড় কাড়ন জীগেশ কোড়েণ।সওদাগর সাহেব বলেন," বাবাজান নাকি চলে যাবেন"। তিনি (জিয়া বাবা) বলেন, "খেলা নাকি।অমনি চলে যেতে পারে? বাবাজান চলে গেলে দরবার শরিফ বিরান হয়ে যাবে না? দশ বছর থাকতে হবে,তা না হলে সাত বছর তো থাকতেই হবে।"
অতঃপর প্রথম ঘটনার( সৈয়দ দেলাওর হোসাইন মাইজভাণ্ডারীর অসুস্থতা) পর বারো বছর বছর পর এবং দ্বিতীয় ঘটনার (হযরত কেবলার আগমন) সাত বছর পর সৈয়দ দেলাওর হোসাইন মাইজভাণ্ডারী কঃ ওফাত প্রাপ্ত হন।