হযরত গাউসুল আ'যম মাইজভান্ডারির জ্যাোতিতে মোরাকাবায় এক ব্যাক্তি জ্বলে ভস্ম হয়ে ফানা হবার বর্ণনা (চলমান শেষ অংশ)
ভোর রাতে যখন হযরত গাউসুল আ’যম ‘রাদ্বিয়াল্লাহু
আনহু’র মেঝ ভাই জনাব মাওলানা আব্দুল হামিদ সাহেব নামায পড়তে মসজিদে
গেলেন,তখন উক্ত শেখ সাহেবের এই ভীতিপ্রদ অবস্থা দেখে ভীত সন্ত্রস্থ অবস্থায়
গাউসুল আ’যমের খেদমতে উপস্থিত হয়ে অবস্থা জানালেন, গাউসুল আ’যম হযরত কেবলা
কঃ এরশাদ ফরমালেন, “ আপনি সেথায় ফিরে যান যেখানে উক্ত শেখ সাহেবের শরিরে
আল্লাহর প্রেমাগ্নি লেগে প্রথমে জ্বলে ভস্ম এবং পরে আল্লাহর অনুগ্রহে
পানিতে পরিণত হয়েছে।ঐ স্থানকে আতর গোলাব দ্বারা সুবাসিত ও সুগন্ধিত করুন
এবং উক্ত জমা পানি একটি সংরক্ষিত স্থানে দাফন করে দিন।খবরদার! এ ব্যাপারে
কাউকে অবগত করাবেন না”।অতএব মৌলভি সাহেব গাউসুল আ’যমের নির্দেশ মতে সকল
কার্য সমাধা করে গাউসুল আ’যম ‘রাদ্বিয়াল্লাহু
আনহু’কে খবর পৌঁছালে গাউসুল আ’যম ‘রাদ্বিয়াল্লাহ আনহু’ বললেন, “যে অলি
“ফানায়ে ফায” তথা বিলীনতার প্রান্ত সীমায় উপনীত হন,তিনি পুনঃরায় নশ্বর জগতে
ফিরে আসা সম্ভব নয়।দুইজন অলি ব্যতিত কেউ এ মকাম থেকে ইহজগতে ফিরে আসে
নি।একজন হলেন হযরত সুলতানুল আউলিয়া সনদুল আছফিয়া মাহবুবে সুবহানি শেখ
মুহিউদ্দিন আবু মুহাম্মদ আব্দুল কাদের জিলানী ‘রাদ্বিয়াল্লাহ আনহু’র ভাগিনা
সৈয়দ আহমদ কবির ইবনে রেফায়ী ‘রহমাতুল্লাহি আলাইহিমা’।অন্য একজন পূর্ব
যুগের অলির বেলায় ও এমনটি ঘটেছে।ভাগ্যমান শেখ আহমদ ‘রহমতুল্লাহি আলাইহি’র
পরম সৌভাগ্য যে,প্রাণেশ্বরর মিলনের মুহূর্তে প্রাণপাখি প্রাণের প্রাণের,উপর
উৎসর্গিত হল,সুবাহানাল্লাহ!
কোন দিলঘায়েলের দিলের এমন সামর্থ? সে প্রেমাকাশের তপনের তাপ সইতে পারে?কতই
প্রিয় বাঞ্ছিত? কতই হৃদয় পাগল করা কাংখিত? যে সর্বজনাবের প্রেম-মুহব্বতের তাপদাহে সর্বদা সূর্যের বক্ষ কবাব এবং আশেককুলের প্রাণ পূর্ণাসক্ত,চমকিত ও বিদীর্ণ।
আয়নায়ে বারি (মূল উর্দু শের) তে উল্লেখ,“ তোমার প্রেমে যে অনল জ্বলিল,দেখ
এবে মম দিল ও জিগর কাবাব হল অন্তরের ব্যাকুলতা বলিব কি প্রিয়া? নমুনা কিছু
চাইলে দেখ তা বিদীর্ণ।“
আয়নায়ে বারি (মূল উর্দু শের) তে আরো উল্লেখ,“ যে সদা তব কদম দেখে,দিল ও নয়না সদা জ্যোতিময় দেখে।
গাউসে আ’যমের চরণ চুমে যে,সদা সে আপন সৌভাগ্য দেখে।
গাউসের চরণ কিবরতিতে আহমর,যার কপালে লেগেছে কিমিয়া দেখে।
পাদুকা মোবারকের ধুলি যে সুরমা,নয়ন জ্যোতিময় হয় যে লাগিয়ে দেখে।
কেউ কি জানিবে গাউসের মর্তবা,দেখেছে যে তার সে খোঁদা দেখে।
যে ওয়াছেল ও কামেল হল তার প্রেমে,নিজেকে সে খোঁদার সাথে মিলিত দেখে।
খোঁদা প্রেমে হল সে ফানাফিল্লাহ ,যে নিজেকে তাঁর পরে মিটায়ে দেখে।
তাঁর সাথে যে,বাঁধে প্রেমের ডুরী,সে আপন সম্পর্ক খোঁদার সনে যুক্ত দেখে।
নিমিষে সে খোঁদার নিকট পৌঁছে,যাকে তিনি বারেক নয়ন তুলে দেখে।
হল যে তাঁর নিকট সদা গৃহীত,সে গাইরুল্লাহ হতে নিজেকে মুক্ত যে দেখে।
যে প্রতিপলে তাঁর পরে হল ফানা,সে লয়ের মাঝে অলয় নিজেকে দেখে।
মকবুল যখন থেকে হল তব কদমচুমি,নিজেকে সে তব পরে লীন দেখে।