"মাইজভাণ্ডারী গাউসিয়া হক কমিটি বাংলাদেশ ",আতুরার ডিপো হাসেম বাজার শাখা। অস্থায়ী ঠিকানাঃখালেদা-মাহমুদা ম্যানশন,সঙ্গীত রোড,পাঁচলাইশ,চট্ট্রগ্রাম. আলাপনী-০১৮৩৮৬৩৭৬৯৮।ই-মেইলঃhoqcommity@gmail.com।

গাউসুল আ’যম মাইজভান্ডারি এর কেরামত পর্বঃ ৪ (আয়নায়ে বারি)

হযরত গাউসুল আ'যম মাইজভাণ্ডারী এর প্রতি অশিস্টতায় অলির বেলায়ত চ্যুতি>>>>>
জনাবে হুজুর পুরনুরে গাউসিয়ার নযরানার সাথে বেয়াদবি করে এক প্রসিদ্ধ অলির বেলায়ত হারাবার হৃদয় বিষন্ন করা ঘটনা, সত্যের স্মারক, সত্যবাক বর্ণনাকারিগণ এ রুপ বর্ণনা করেন। ফটিকছড়ি থানাস্থ শাহ নগর নিবাসী বাহরুল্লাহ নামক একজন,উচ্চ মর্যাদাবান,ছাহে
বে মকামাত,আল্লাহর নৈকট্য প্রাপ্ত প্রিয় অলি ছিলেন।তিনি সময়সাময়িক কোন অলিয়াল্লাহকে আপন সমকক্ষ মনে করতেন না।একদা গাউসুল আ’যম মাইজভান্ডারি কঃ এর অনুরক্ত কাঞ্চনপুর নিবাসী এক ব্যাক্তি বাজারবাছা এক হাড়ি মহিষের দই কিনে হাদিয়া দেবার মানসে দরবারে গাউসিয়ায় নিয়ে যাচ্ছিলেন।বাহরুল্লাহ সাহেব তখন রাস্তার মাথা বসা ছিলেন।আল্লাহ মা’লুম তাঁর অন্তরে কি খিয়াল এসেছে? সে হাদিয়া সমেত গমনকারীকে দেখে জিজ্ঞাসা করল “তুমি এই দই হাদিয়া আমার সম্মুখ দিয়ে কোন মহান ও মর্যাদাবান ব্যাক্তির জন্য নিয়ে যাচ্ছ?” সে জানাল যে হুজুর! এই হাদিয়া-নযরানা হযরত কুতুবুল্লাহিল আফখম গাউসুল্লাহিল আ’যম মাইজভাণ্ডারী ‘রদ্বিয়াল্লাহু আনহু’র জনয।আত্মহমিকতায় আঘাতকারি এ সংবাদ শুনামাত্র উক্ত শাহ সাহেব সত্ত্বর আপন বসার স্থান থেকে উঠে জোর পূর্বক ঐ দইয়ের হাঁড়ি ছিনিয়ে নিল।এ যুগে আমার চেয়ে হাদিয়া খাওয়ার অধিক যোগ্য সে আবার কে? বলে গাউসুল আ’যমের হাদিয়ায় আঙ্গুল ডুবিয়ে উপর থেকে কিছু খেল এবং অবশিষ্টাং থুথু দিয়ে হাদিয়া আনয়নকারিকে দিয়ে দিল।সে অত্যন্ত দুঃখ ভারাক্রান্ত অন্তরে সজল নয়নে ঐ বেয়াদবির নালিশ দেয়ার জন্য গাউসুল আ’যমের আলীশান দরবারে নিরবে দইয়ের হাঁড়ি নিয়ে উপস্থিত হল।এখনও পর্যন্ত ঐ ব্যাক্তি সুমহান আস্তানা শরিফের বারান্দা পর্যন্ত পৌঁছেনি,হযরত গাউসুল্লাহিল আ’যম এর জালালিয়তের সমুদ্র জোয়ারে উচ্ছাসিত হয়ে এরশাদ করলেন, “সাবধান! দইয়ের হাঁড়ি আমার দরবার পর্যন্ত পৌঁছাবে না।হারামজাদা! বাহরুল্লাহ-কে বলবে দইয়ের হাঁড়ি গুহ্যদ্বারে দিতে”। হযরতের জালালিয়ত দেখে সম্মুখে গিয়ে ঘটনার বিবরণ দেওয়ার সাহস হল না আগন্তুকের,সে স্বভয়ে সেখান থেকে ফিরে হযরত গাউসে পাক এর অবশ্য তামিল যোগ্য নির্দেশ মতে ঐ দইয়ের হাঁড়ি উক্ত বাহরুল্লাহর সামনে রেখে আপন নিবাসে প্রত্যাগমন করল।সে দিন থেকেই আল্লাহর মহান নেয়ামত বেলায়ত বাহরুল্লাহ হতে ছিনিত হল এবং আল্লাহর দরবারে যে মান-মর্যাদা ছিল তা সম্পূর্ণ বিলুপ্ত হয়ে গেল।প্রভুর দরবার হতে সম্পূর্ণ বিতাড়িত হল।ভদ্র-অভদ্র,অভিজত-সাধারণ সর্বমহলে ধিক্কৃত হতে লাগল।যততত্র অপমান ও লাঞ্চনার স্বীকার হচ্ছিল।কিছুকাল এমন তিরস্কার অবস্থায় ভবলীলা সাঙ্গ করে,পরলোকগত হয়।“আউলিয়াদের সাথে বেয়াদবি থেকে আমরা আল্লাহর আশ্রয় নিচ্ছি” সত্যই যখন ভাগ্য মন্দতা মুখ দেখায় তখন এই পরিণতি হয়।“যখন তাকদীরের ফয়সালা উপস্থিত হয় তখন বিস্তৃত ময়দান সংকীর্ণ হয়ে যায় এবং যখন ললাটের লিখ বাস্তবায়িত হতে চলে তখন চক্ষু অন্ধ হয়ে যায়”। এর মর্ম মতে যখন কারো দুর্ভাগ্য উপস্থিত হয় তখন সে নিজ অপেক্ষা সম্মানিত ও শীর্ষস্থানিয়দের সাথে বেয়াদবি করে।
আয়নায়ে বারি (মূল উর্দু শের) তে উল্লেখ,“ প্রভু মিলন পথে যে হল বেয়াদব,বঞ্ছিত হল সে হতে প্রভু নেয়ামত।
বেয়াদব যে সেতো নপুংসক বটে,অশিষ্ট পায়না কভু দরদ ও মুহব্বত।
শয়তানের অসম্মান বেয়াদবি হেতু,ঔদ্ধতা ও অপরমান এক বৃত্তে গুথিত ।
পূত জনে পেল উচ্চতা শিষ্টতার কারণে,বলগাহীনতায় জুটে শুধু অধপাত।
দেখ আদব হেতু আকাশ আলো জ্বলমল,আদবদারই হয় ফুল্ল,পুলকিত।
আল্লাহর বন্ধুসনে করে যে বেয়াদবি,তার থেকে প্রভু নেয়ামত হয় ছিনিত।
সে কারণে বলেছেন আল্লামা রুমী,মসনবি খুলে দেখ হতে নিশ্চিত।
আদবের শক্তি চাই প্রভুর সকাশে,প্রভু কৃপা হতে বেয়াদব যে বঞ্চিত।
আদব হেতু নূরে পূর্ণ এ আকাশ,আদবের কারণে ফেরেস্তাগণ হল পূত।
তরীকত পন্থে করে যে জন বেয়াদবী,গোমরাহি কূপে সে হবে নিক্ষিপ্ত।
আউলিয়া সহিত বেয়াদবী করে যে মরে,তার তরে মন্দ পরিণতি নিশ্চিত।
গাউসে হক মকবুল তব ভৃত্য হয়,আদবের তৌফিক দানে করো আলোকিত”।
আয়নায়ে বারি (মূল উর্দু শের) তে আরও উল্লেখ,“ গাউসে মাইজভাণ্ডারীর আস্তানার ধুলি হবে যে,
কসম আল্লাহর! দুই জগতে সে সুলতান হবে।উচ্চ শান আল্লাহর তাঁকে এমন করলেন দান,
গগণের তপন রুপ দর্শনে পর্দারাড়ে লুকাবে।লাল তারকার মত তাঁকে করে দেন নূরানী।
খাঁটি অন্তরে যে জন দরবারে অণু হবে,গাউসুল্লাহর মকবুল যে আল্লাহর অনুগৃহীত,
সে দ্বারের বিতাড়িত নিশ্চয় প্রভু নিগৃহীত হবে।
সে দরবারে আলীর প্রতি বেআদবি রাখলে মনে,
খোঁদার রোষানলে পড়ে তরবারীস্থ হবে।
করলে বেয়াদবী তাঁর শানে বেলায়ত হারাবে,
মহাপ্রতাপশালীর প্রতাপে শাস্তি যোগ্য হবে।
বেয়াদবী করবে যে,সে যে ঈমান হারাবে যথা তথা লাঞ্ছিত আর অপরমানি সে হব।
চরম হতভাগা নিশ্চয় গোসতাখে দরবার যে,
রোজ হাশরে নরকাগ্নির যোগ্য নিশ্চয় হবে।
ইহাহুদ বা নসরা মূলে সেই ভাগ্যহত,
গাউসে খোঁদার সাথে যে অন্তরে রেষ রাখবে।
হবে না মুনকের তার,বিনে পাপিষ্ট নরাধম,
সে আদি হতভাগা খোঁদা কর্তৃক যে হবে।
ওয়াল্লাহে দু’জগতের সৌভাগ্যে ধন্য হবে সে,
কদাচ যে অন্তরে গাউসুল আ’যমের বাধ্য হবে।
হীন মকবুল অন্তরে,গাউসুল আ’যমে কুরবান,
নহে আশ্চর্য যদিচ দীদার নসিব হবে”। (চলবে)
তদ্রুপ উল্লেখ্য বড় পির গাউসুল আ'যম আব্দুল কাদের জিলানী কঃ এর জিবনিগ্রন্থ (বাহজাতুল আসরার ওয়া মা'দিনুল আনয়ার) পাওয়া যায় ,বড় পিরের শানে বেয়াদবির কারণে,এক অলির বেলায়ত নস্ট হয়ে গেছিল।